৪১তম বিসিএস প্রিলির বুকলিস্ট। যে যে বই পড়তে হবে তা জেনে নিন।
৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার অনেক ভালো ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রস্তুতির জন্য কী কী বই পড়বেন?
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য বাংলাদেশের বেশিরভাগ চাকরি প্রত্যাশী উচ্চ শিক্ষিতর স্বপ্ন থাকে বলা চলে। কেননা, বিসিএস ক্যাডার জব একটি অনেক সম্মানের সরকারি ফার্স্ট ক্লাস গেজেটেড জব, জব সিকিউরিটি অনেক ভালো এবং বেতন-ভাতা ভালো, ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল সর্বোপরি বিসিএস ক্যাডেরদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। কিন্ত বেশির ভাগ বিসিএস ক্যাডার প্রত্যাশীই জানেন না বিসিএসের জন্য কি কি বই পড়তে হবে কিংবা কিভাবে শুরু করতে হবে।
আমার কাছে মনে হয় এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, কেউ যদি আমার লিখা বাংলাদেশের প্রথম সাজেশনভিত্তিক বই “BCS Preliminary Analysis” বইটি বুঝে বুঝে পড়ে সম্পূর্ণভাবে শেষ করেন, আমি মনে করি শর্টকাটে বিসিএস প্রিলি পাশের জন্য এই বইটি যথেষ্ট ইনশাল্লাহ। কেবল বিসিএস প্রিলির প্রশ্ন সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে (অনেক সময় বিগত সাল থেকে প্রশ্ন রিপিটও হয়) বিসিএস প্রিলি প্রশ্নব্যাংক ও আপডেট থাকার জন্য এই বইটি সাথে প্রত্যেক মাসের “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সটি” পড়তে হবে আর কিছু লাগবে না। তবে কেউ যদি ম্যাথে বেশি দুর্বল হয়ে থাকে ক্লাস ৫-১০ এর ম্যাথগুলো (সৃজনশীল) করে নিবেন।বিসিএস প্রিলির জন্য কোন কোন বইগুলো ভালো বা বিসিএস প্রিলির জন্য কোন কোন বইগুলো পড়তে হবে ফেইসবুকে/আমার ফেইসবুক গ্রুপে, আমার ফেইসবুক পেইজে, ফোনে অনেক জিজ্ঞেস করে থাকেন অনেক সময়। কিন্তু সবাইকে এক এক করে উত্তর দেওয়া সম্ভবপর নয় বিধায় বলতাম, “এই বিষয়ে একদিন লিখবো।” কিন্তু চাকরির ব্যস্ততা আর “BCS Preliminary Analysis” বইটির ২য় এডিশনের কাজের জন্য লিখবো লিখবো করেও সময় হয়ে উঠছিল না। তাই আজ লিখেই ফেললাম! এর দ্বারা যদি একজনেরও উপকার হয় কিংবা কাজে আসে তাহলে আমার এই লিখা সার্থক।
তারপরও যাদের হাতে অনেক সময় আছে আমি মনে করি তাদের “BCS Preliminary Analysis” বইটির পাশাপাশি আরো সূক্ষ্ম প্রস্তুতির জন্য আরো কিছু বই পড়া উচিত যা তাদের জ্ঞানের পরিধি যেমন বিস্তৃত করবে তেমনিভাবে বিসিএস রিটেনে অনেক হেল্প করবে।
আমার কাছে BCS প্রিলিমিনারির জন্য যে বইগুলো ভালো লেগেছে বা কাজের মনে হয়েছে তা নিচে শেয়ার করলাম-
১. বাংলা ব্যাকরণ ৯-১০ শ্রেণি, শীকর বাংলা/ প্রফেসর’স বাংলা/MP3 বাংলা (প্র্যাকটিসের জন্য)।
২. ইংরেজীর জন্য, Applied English Grammar and Composition by PC Das, Advanced Learners’ Functional English( Communicative টা নয়), by Chowdhury & Hossain, Saifur’s Vocabulary, English for Competitive Exam by Fazlul Hoque (প্র্যাকটিসের জন্য)
৩. সাধারণ জ্ঞান, MP3/নতুন বিশ্ব+ মাসিক Current Affairs।
৪. গনিত, MP3 Math Review/Shahin’s Math/ Shortcut Math/প্রফেসর’স স্পেশাল গণিত+ ক্লাস ৫-১০ Text Books (সৃজনশীল)
৫. MP3 George’s Mental Ability/প্রফেসর’স মানসিক দক্ষতা + বিসিএস রিটেনের বিগত সালের মানসিক দক্ষতার সকল প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ
৬. সুশাসন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ, ভূগোল ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা – Assurance Publications এর “সুশাসন, নৈতিকতা এবং ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থপনা” এই বইটি পড়তে পারেন; সাথে নবম – দশম শ্রেণির ভূগোল বইটি ও এইচএসসি “পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্র পড়তে পারলে আরো ভালো করতে পারবেন।
৭. বিজ্ঞান- ওরাকল/MP3 বিজ্ঞান।
৮. কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি- Easy Computer + তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (একাদশ শ্রেণি) – প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান
৯. English Literature – A Short Handbook On English Literature by Sharif Ahmed Chaudhury/Miracle Literature।
১০. “কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স বিসিএস প্রিলিমিনারি বিশেষ সংখ্যা”।
১১. বিসিএস প্রিলি প্রশ্ন ব্যাংক- প্রফেসর’স প্রকাশন (ব্যাখ্যাসহ পড়তে হবে। কারণ বিগত সাল থেকে অনেক প্রশ্ন রিপিট করে)
আর যাদের হাতে সময় কম বা চাকরিজীবী কিংবা এত বেশি বই পড়তে পারেন না তারা “BCS Preliminary Analysis” বইটি পড়লে অনেক উপকার পাবেন। কেননা এই এক বইয়ে বিসিএস সব বিষয় অর্থাৎ ১২টি বিষয় একসাথে গুছানো আকারে পাবেন। এই বইয়ে কোনো অপ্রয়োজনীয় তথ্য নেই। বইটি আমার বিসিএস জীবনের দীর্ঘ ৫ বছরের অভিজ্ঞতা, নোট ও সাজেশন দিয়ে রচিত।
মনে রাখবেন, “কম পড়বেন কিন্তু Important বিষয়গুলো পড়বেন!” প্রিলির জন্য ২০০তে ১৮০-৯০ পাওয়া লাগে না ; ১২০ নম্বর পেলেই পাশ নিশ্চিত*মনে রাখবেন, “কম পড়বেন কিন্তু Important বিষয়গুলো পড়বেন!” প্রিলির জন্য ২০০তে ১৮০-৯০ পাওয়া লাগে না ; ১২০ নম্বর পেলেই পাশ নিশ্চিত!
শুধু “BCS Preliminary Analysis” বইটি + প্রিলি প্রশ্নব্যাংক/জব সল্যুশন + কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়লেই ইনশাল্লাহ বিসিএস প্রিলি পাশ করতে পারবেন। কিন্তু বেশি বেশি জানার জন্য বেশি বেশি পড়ার বিকল্প নেই।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন এবং জীবনে পরিশ্রম করলে যেন সফল হোন সেই শুভ কামনা রইল। আর হতাশ হওয়ার কিছু নেই; কখনো হতাশ হবেন না। সব সময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। আল্লাহ সব সময় পরিশ্রমীদের সাথেই আছেন। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে একনিষ্ঠ ও সৎ উদ্দেশ্যে পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না।
আমি নিজেই অনার্স পরীক্ষার পর রেজাল্ট বের হয়নি তখনো, এপিয়ার্ড দিয়ে জীবনের প্রথম বিসিএস ৩৪তম বিসিএসে প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পাশ করার পরও পিএসসি আমাকে কোনো ক্যাডার দেয়নি, সেইবার আমি নন-ক্যাডার জব পেয়েছিলাম যদিও সেই জবে আমি জয়েন করিনি। কারণ এরই মাঝে আমি পূবালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে জব পেয়ে গেলাম। তারপর ৩৫তম বিসিএস দিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে ও সকলের দোয়ায় ৩৫তম বিসিএসে এসে সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত “বিসিএস ক্যাডার” টাইটেল পেয়ে গেলাম এবং পূবালী ব্যাংকের জবটা ছেড়ে দিলাম। তারপর ৩৬তম বিসিএস দিলাম এডমিন ক্যাডার হওয়ার মনসে কিন্তু পিএসসি দিল না! আবার গত ০২/০১/২০১৮ তে ৩৭তম বিসিএস ভাইভা দিয়েছিলাম, আবারো নন-ক্যাডার। এই নিয়ে ১ বার ক্যাডার পেলাম, ৩ বার নন-ক্যাডার। ৩৮তম বিসিএস প্রিলি জাস্ট Attend করলাম। আলহামদুলিল্লাহ্ ৩৮তম বিসিএস প্রিলিতেও পাশ; তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন।
No comments