Breaking News

৫ ব্যাংকের অফিসার পদে প্রিলির প্রস্তুতি

 ৫ ব্যাংকের অফিসার পদে প্রিলির প্রস্তুতি

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত ৫টি ব্যাংকে ‘অফিসার (ক্যাশ)’ পদে ১৫১১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বাছাই প্রক্রিয়ার প্রথমেই হবে প্রিলি পরীক্ষা। প্রিলির প্রস্তুতি নিয়ে রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহরিয়ার আলম রানা ও জনতা ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রাজিব কুমারের সঙ্গে আলাপ করে বিস্তারিত জানাচ্ছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
পরীক্ষা যেভাবে
প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরে প্রিলিমিনারি বা প্রিলি পরীক্ষা। এ পরীক্ষা হয় এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী) পদ্ধতিতে। দ্বিতীয় ধাপে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা। আর সর্বশেষে ২৫ নম্বরের ভাইভা। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তির ওপর মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ গণিতে ৩০, ইংরেজিতে ২৫, বাংলায় ২০, সাধারণ জ্ঞানে ১৫ ও কম্পিউটর/তথ্য-প্রযুক্তিতে ১০ নম্বর করে প্রশ্ন থাকে।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি
♦
ইংরেজি : ইংরেজি অংশে মূলত দুই ধরনের প্রশ্ন থাকে; প্রথমত, Vocabulary based, দ্বিতীয়ত, Grammar based। Vocabulary ভিত্তিক টপিকগুলো হলো—Synonyms ্ Antonyms, One word substitution, Replacing underlined word, Analogy, Odd man out, Spelling, Sentence Completion, Group verb, Appropriate preposition, Idioms & Phrase। আর Grammar-ভিত্তিক টপিকগুলো হলো—Error Finding, Sentence Correction, Correct Sentence Choice, Rearrange Sentence Parts, Grammar Based Fill in the blanks|
ভোকাবুলারি অংশের জন্য প্রথমে মহিউদ্দীনের লেখা An exclusive book of synonyms and antonyms বই থেকে আগের পরীক্ষাগুলোতে (সব ব্যাংক) আসা ভোকাবুলারি মুখস্থ করা যেতে পারে। হয়তো দেখবেন—এর মধ্যে অনেক ভোকাবুলারি মোটামুটি পরিচিত। ইংরেজি পত্রিকা নিয়মিত পড়ার অভ্যাস করুন। ইংরেজি পত্রিকা পড়ার সময় অজানা বা কঠিন শব্দগুলো খাতায় নোট করে ডিকশনারি থেকে অর্থ জেনে নিন। তারপর সেগুলো প্রতিদিন পড়ুন। এরপর নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে অনেক অর্থ বুঝতে পারবেন। অর্থাত্ ভোকাবুলারি নাগালে আসবে। আর অনুবাদ চর্চা করলে লিখিত পরীক্ষায় তা ফোকাস রাইটিং, অনুবাদ ইত্যাদি অংশে দারুণ কাজে দেবে। গ্রামার অংশের জন্য Cliffs toefl বইটা পড়তে পারেন। সহজ-সাবলীল ভাষায় লেখা। এটি ভালো করে পড়তে পারলে গ্রামারের জন্য তেমন চিন্তা করতে হবে না। তারপর একটা গাইড বই থেকে বিগত সালের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো বেশি বেশি অনুশীলন করুন।
♦
গণিত : ব্যাংকের গণিতের প্রস্তুতির জন্য আগারওয়ালের বইটি দারুণ কাজে দেয়। এ বই থেকে শুধু গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো অনুশীলন করতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে টপিকভিত্তিক প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। আর যাদের গণিতের বেসিক দুর্বল, তারা পর্যায়ক্রমে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির গণিত বই ভালোভাবে অনুশীলন করুন। শতকরা, সুদকষা, সময় ও কাজ, সময় ও দূরত্ব, লাভ-ক্ষতি, বয়স, নল ও চৌবাচ্চা, অনুপাত-সমানুপাত, পরিমাপ ও একক, গড়, অংশীদারি ও ভাজ্য, মিশ্র ও দ্রবণ, বিন্যাস-সমাবেশ প্রভৃতি। বীজগণিতের রাশিমালা, সূচক, সমীকরণ, লগারিদম, সেট, সিরিজ থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে। জ্যামিতির ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বহুভুজ, স্থানাঙ্ক ও দূরত্ব থেকেও প্রশ্ন আসে। এ ছাড়া পরিমিতি ও ত্রিকোণমিতি থেকেও মাঝেমধ্যে প্রশ্ন থাকে।
♦
বাংলা : বাংলায় সাহিত্যের চেয়ে ব্যাকরণ অংশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকরণ অংশে প্রস্তুতির জন্য মুনীর চৌধুরীর লেখা নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইটি বুঝে-শুনে পড়তে হবে। ভাষা, ধ্বনি, বর্ণ, সমাস, কারক ও বিভক্তি, সন্ধিবিচ্ছেদ, বচন, শব্দের প্রকারভেদ, লিঙ্গান্তর, বাক্য, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ ইত্যাদির ওপর বেশি প্রশ্ন থাকে। তাই টপিকগুলোতে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তবে কিছু কিছু বিষয় আছে, যেগুলো শুধু নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইয়ের ওপর নির্ভর না করে, বিস্তর প্রস্তুতি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ড. হায়াত্ মামুদের লেখা ভাষা শিক্ষা বইটি পড়া যেতে পারে। ভাষা শিক্ষা বই থেকে পড়তে হবে—পরিভাষা, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, বানান শুদ্ধি, শব্দের প্রয়োগ-অপপ্রয়োগ, এককথায় প্রকাশ, প্রবাদ-প্রবচন প্রভৃতি। সাহিত্য থেকে সাধারণত খুব একটা প্রশ্ন আসে না। সাহিত্য অংশের প্রস্তুতির জন্য বাজারের ভালো মানের যেকোনো গাইড বই অনুসরণ করলেই চলবে। সাহিত্য অংশে বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো পড়লে কমন পড়ার সম্ভাবনা বেশি।
♦
সাধারণ জ্ঞান : সাধারণ জ্ঞানে দুই ধরনের প্রশ্ন থাকে। প্রথমত, স্থায়ী তথ্য বা ঘটনার ওপর, দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক তথ্য বা ঘটনার ওপর। সাধারণ জ্ঞানের পরিধি বিশাল। তাই সমসাময়িক ঘটনা ও তথ্য নজরে রাখতে হবে। এর জন্য নিয়মিত পত্রিকা ও তথ্যবহুল ওয়েবসাইট-বই দেখা যেতে পারে। আগের বছরের ব্যাংক নিয়োগের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন এসেছে। যেমন—সমসাময়িক রাজনীতি, নির্বাচন, নারীনীতি, সমাজনীতি, পরিবেশনীতি, খেলাধুলা, পুরস্কার ইত্যাদি। এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষাবিষয়ক তথ্য, বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিবিষয়ক তথ্য—জিডিপি, মাথাপিছু আয়, মুদ্রা, জাতীয় ব্যাংকের নাম, জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকসহ এদের সব অঙ্গসংগঠন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়িক চুক্তি ইত্যাদি। এ ছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাস (১৯৪৭-১৯৭১) ভালোভাবে জানা থাকতে হবে। সাধারণ জ্ঞানে ভালো প্রস্তুতির জন্য পত্রিকার বাণিজ্য ও অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক, উপসম্পাদকীয় ও খেলাধুলাবিষয়ক খবর, নিবন্ধ ও তথ্য নিয়মিত পড়তে হবে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্তগুলো খাতায় নোট করে রাখা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও সিএনএনের খবরগুলো দেখতে পারলে ভালো হয়। কালের কণ্ঠ পত্রিকার ‘চাকরি আছে’ পাতায় প্রতি মাসের শেষ সপ্তাহে (শনিবার) সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশ বিষয়াবলির ওপর একটি মডেল টেস্ট (উত্তরসহ) দেওয়া হয়। মডেল টেস্টটি পড়তে পারলে সাম্প্রতিকের বিষয়াবলির জন্য কাজে দেবে। এ ছাড়া বাজারে প্রচলিত সাধারণ জ্ঞানের ভালো মানের একটি গাইড বই পড়া যেতে পারে।
♦
কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি : কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি অংশে প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিকের কম্পিউটার বইটি পড়া যেতে পারে। তা ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিকের তথ্য-প্রযুক্তি বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো পড়তে পারলে ভালো হয়। এ ছাড়া বাজারের ভালো মানের একটি গাইড বই পড়া যেতে পারে। কম্পিউটারের ইতিহাস, কম্পিউটারের প্রকারভেদ, ক্রমবিবর্তন, সংগঠন, সিস্টেম ইউনিট, আউটপুট ইউনিট, মেমোরি, স্টোরেড ডিভাইস, কম্পিউটার বাস, কম্পিউটার সফটওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, ডাটাবেইস, ডিজিটাল লজিক, সেলুলার ফোন, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট, ই-মেইল, ই-কমার্স, সামাজিক যোগাযোগ, ইউটিলিটি প্রগ্রাম, এমএস ওয়ার্ড, এমএস এক্সেল ইত্যাদি টপিক থেকে সাধারণত প্রশ্ন আসে। বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো বেশি বেশি অনুশীলন করতে হবে। এ ছাড়া নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতিবিষয়ক বিভিন্ন ওয়েবসাইটও দেখা যেতে পারে।
প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তির ওপর মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে।

No comments