গুরুত্বপূর্ণ কিছু কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা
বিশ্বের যেসব দেশে যে-কেউ যে-কোনাে খাতে পুঁজি বিনিয়ােগ করতে পারবে এবং শিল্প,কলকারখানা ও ব্যবসা বাণিজ্য অর্থাৎ সেই খাত থেকে মুনাফা ইচ্ছামতাে আবার বিনিয়ােগ করতে পারবে বা অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারবে। অর্থনীতির এই নীতিকে খােলা দরজানীতি বলে। হংকং,সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশে এই নীতির প্রচলন রয়েছে।
@@ডেমােক্যাটিক ডিপ্লোম্যাসি
ডেমােক্র্যাটিক ডিপ্লোম্যাসির প্রবক্তা হলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন। তিনি
বিখ্যাত 'Fourteen Points' এ ১৯১৮ সালের জানুয়ারিতে এই ডেমােক্র্যাটিক ডিপ্লম্যাসির জনক বলেন।
I feta a, Open covenants of peace, openly arrived at, after which there
shall be no private international understandings of any kind but diplomacy shall proceed always frankly and in the public view."
®®সাইডলাইন কূটনীতি
বর্তমানে করিডাের বা সাইড লাইন কূটনীতি মূলত বিভিন্ন ধরনের কনফারেন্স চলাকালীন সময়ে ঘটে
থাকে। মূল আলােচনার বাইরে এ সমস্ত আলােচনা আনুষ্ঠানিকভাবে হয়। এতে বিভিন্ন ধরনের বিষয়
আসতে পারে। মূল কনফারেন্সে যাবার আগে তাদের মনােভাবও এসব কূটনীতির দ্বারা জানা যায়।
®®টেলিফোন কূটনীতি
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির ফলে কূটনীতির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এর ফলে
গতানুগতিক দূতদের দ্বারা কূটনীতি বা সরাসরি কোন দেশে গিয়ে কূটনীতিক তৎপরতা চালানাে
এরকম ধারণায় পরিবর্তন এনেছে। বর্তমানে 'টেলিফোন কৃটনীতি একটি বহুল আলােচিত বিষয়।অর্থাৎ কুটনীতির প্রকৃতিতে পরিবর্তন এসেছে।
®®® (Ping Pong Diplomacy)
১৯৭১ সালে বিশ্ব টেবিল টেনিস প্রতিযােগিতা চীনে অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন ক্রীড়াবিদরা এতে যোেগ দেন এবং ১০-১৭ এপ্রিল চীনে অবস্থান করেন। তারা প্রদর্শনী খেলায় অংশ নেন এবং চীনের বিভিন্ন স্থান ভ্ৰমণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল চৌ এন লাই ওই দলকে আপ্যায়ন করেন এবং বলেন,You opened a new phase of relation between PRC and US. if a he ae
যে, শীঘ্রই চীনা দলকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানাে হবে। এর মাধ্যমে ১৯৪৯ সালের পর ফের চান ও
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
®®সানশাইন পলিসি
দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা প্রশমন করে সৌহার্দপূর্ণ ও সম্প্রীতিমূলক আচরণ বজায় রাখার লক্ষ্যে যে পলিসি গ্রহণ করা হয়, তা-ই সানশাইন পলিসি। ১৯৯৮ সালে দাক্ষণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম দায়ে জংয়ের উদ্যোগে এ নীতি গ্রহণ করা হয়। কিম দায়ে জং এই নাতির জন্য ২০০০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
®®পারসােনা নন গ্রাটা (Persona non grata) : শব্দের আক্ষরিক অর্থ অবাঞ্ছিত বা অগ্রহণযােগ্য।
ব্যক্তি। কূটনীতিতে পারসােনা নন গ্রাটা বলতে এমন বহির্দেশীয় ব্যক্তিকে বােঝায়, যার নির্দিষ্ট কোনএকটি রাষ্ট্রে অবস্থান ও প্রবেশ ঐ রাষ্ট্রের সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘােষণা করা হয়েছে। সংক্ষেপে।পারসােনা নন গ্রাটা বলতে এমন ব্যক্তিকে বােঝায়, যিনি গ্রাহক রাষ্ট্র কর্তৃক অগ্রহণযােগ্য ও ঘােষিত হয়েছেন। এ ধরনের ব্যক্তি অবাঞ্ছ্চিত বলে ঘােষিত হলেই ঐ দেশ থেকে 'প্রত্যাহারযােগ্যবলে বিবেচিত হবে।
®®Protocol (প্রটোকল) : চুক্তি আইন ও ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপটে একটি প্রটোকলের একটি চুক্তির সমান বৈশিষ্ট্য থাকে। অবশ্য প্রটোকল দ্বারা চুক্তি বা কনভেনশনের চেয়ে কম আনুষ্ঠানিক চুক্তি বােঝায় প্রটোকল পারিভাষিক অর্থে প্রটোকল হলাে পদস্থ কোনাে সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ও যথারীতি সত্যায়িত লেনদেন বা চুক্তি ইত্যাদি সংক্রান্ত মূল মন্তব্য বা কার্যবিবরণী। এই বিবরণী পরবর্তী যে-কোনাে দলিলকে বৈধতা প্রদান করে।
®®ডি-জিউর (De-jure) : আইনসম্মতভাবে কোনাে নতুন রাষ্ট্র এবং সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিদানের প্রক্রিয়াকে ডি-জিউর বলা হয়।
®®ডি-ফ্যাক্টো (De-facto) : আইনি দৃষ্টিতে যা-ই হােক, কার্যত যা বিদ্যমান বা অস্তিত্বশীল, তাকেই
বলে ডি-ফ্যাক্টো। যেমন কোনাে দেশের বিদ্রোহী গােষ্ঠী সরকারের সমান্তরাল ক্ষমতা করায়ত্ত করলে তাকে ডি-ফ্যাক্টো বলে।
®®দূতাবাস (Embassy) : যেখানে রাষ্ট্রদূত ও তার কর্মচারীরা থাকেন, সে স্থানকে দূতাবাস বলা হয়।
®®এনভয় (Envoy) : বিদেশে প্রেরিত রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদের মাঝে রাষ্ট্রদূত এবং চার্জ দি অ্যাফেয়ার্সের মাঝামাঝি পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিকে এনভয় বলে।
®®হাইকমিশনার (High Commissioner) : হাইকমিশনার হচ্ছেন এক কমনওয়েলথ রাষ্ট্র থেকে অপর কমনওয়েলথ রাষ্ট্রে প্রেরিত সর্বোচ্চ শ্রেণির কূটনৈতিক প্রতিনিধি। যেসব রাষ্ট্র কমনওয়েলথভুক্ত নয়, সেসব রাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রদূত (Ambassador) বলা হয়।
®®Multi Track Diplomacy : এ ধরনের বিভিন্নমুখী কূটনৈতিক উদ্যোগকে যখন বিভিন্ন ট্র্যাকে একই সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া হয়, তাকে মাল্টিট্যাক কূটনীতি বলে।
®®Cricket Diplomacy : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে "ক্রিকেট কূটনীতির কথা বলা যায়।
®®Multilateral Diplomacy (বহুপক্ষীয় কূটনীতি) : তিন বা ততােধিক দেশের অংশগ্রহণে সম্মেলনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপে যে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানাে হয়, তা উপাঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়েও হতে পারে। এটি দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি থেকে সুস্পষ্টভাবে আলাদা, যা রাষ্ট্র বনাম রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পাদিত হয়। দ্বিপক্ষীয় কূটনীতি অবশ্য বহুপক্ষীয় কূটনীতির পরিপূরক
supplementary)। বহুপক্ষীয় সম্মেলনগুলা (কুটনীতি) আকার, অংশগ্রহণের পর্যায়, দীর্ঘতা,
আমলাতান্ত্রিকতার মাত্রা প্রভৃতি বিচারে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন- ক্ষুদ্র অস্থায়ী (ad hoc)
সম্মেলন থেকে শুরু করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনগুলাে পর্যন্ত হতে পারে। বহুপক্ষীয় কূটনীতি আন্তঃনির্ভরশীলতার যুগে বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
®®Ad hoc diplomat (অস্থায়ী কূটনীতিক) : পরিভাষাটির সুনির্দিষ্ট কোনাে অর্থ নেই। কখনাে
কখনাে এটি দ্বারা রাজনৈতিক নেতা, যেমন রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান অথবা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বােঝায়, যখন তারা কনককাণ্ডে যুক্ত থাকেন।
No comments