বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কিত গুরুত্যপূর্ণ প্রশ্ন
আধুনিক বাংলা ভাষার পরিধি কত সাল থেকে শুরু হয়েছে? উঃ ১৮০১ সাল থেকে।
(প্রস্তুতিপর্বঃ ১৮০০-১৮৬০, বিকাশপর্বঃ ১৮৬০-১৯০০, রবীন্দ্রপর্বঃ ১৯০০-১৯৩০, রবীন্দ্রোত্তরঃ ১৯৩০-১৯৪৭ ও বাংলাদেশঃ ১৯৪৭-বর্তমান পর্যন্তু)
বাংলা ভাষার উৎপত্তি কোন শতাব্দীতে? উঃ সপ্তম শতাব্দী।
পানিনি রচিত গ্রন্থের নাম কি? উঃ ব্যাকরণ অষ্টাধয়ী।
পানিণি কোন ভাষার ব্যাকরণকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন? উঃ সংস্কৃত ভাষা।
বাংলা ভাষার মূল উৎস কোনটি? উঃ বৈদিক।
বাংলা ভাষার আদি সাহিত্যিক নিদর্শন কি? উঃ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য।
বাংলা ভাষা কোন আদি বা মূল ভাষা গোষ্ঠীর অর্ন্তগত? উঃ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোষ্ঠী।
বাংলা ভাষার উদ্ভব ঘটে কোন দশকে? উঃ খ্রিষ্টিয় দশম শতকের কাছাকাছি সময়ে।
ভারতীয় আর্য ভাষার প্রাচীন রূপ কোথায় পাওয়া যায়? উঃ প্রাচীন গ্রন্থ ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলোতে।
কখন থেকে বাংলা গদ্যের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়? উঃ আধুনিক যুগে।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে খ্রীষ্টপূর্ব কত পর্যন্ত বাংলা ভাষার অস্তিত্ব ছিল? উঃ পাঁচ হাজার বছর।
আর্য ভারতীয় গোষ্ঠীর প্রাচীনতম সাহিত্যের ভাষার নাম কি? উঃ বৈদিক ও সংস্কৃত ভাষা।
বাংলা ভাষার মূল উৎস কোন ভাষা? উঃ বৈদিক ভাষা।
বৈদিক ভাষা থেকে বাংলা ভাষা পর্যন্ত বিবর্তনের প্রধান তিনটি ধারা কি কি? উঃ প্রচীন ভারতীয় আর্য, মধ্য ভারতীয় আর্য ও নব্য ভারতীয় আর্য।
কোন ভাষা বৈদিক ভাষা নামে স্বীকৃত? উঃ আর্যগণ যে ভাষায় বেদ-সংহিতা রচনা করেছেন।
কোন ব্যাকরণবিদের কাছে সংস্কৃত ভাষা চূড়ান্তভাবে বিধিবদ্ধ হয়? উঃ ব্যাকরণবিদ পানিনি।
সংস্কৃত ভাষা কত অব্দে চূড়ান্তভাবে বিধিবদ্ধ হয়? উঃ খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ সময়ে।
কোন ভাষাকে প্রাকৃত ভাষা বলে? উঃ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ খ্রীঃ দিকে বৈদিক ভাষা বির্বতনকালীণ সময়ে
জনসাধারন যে ভাষায় নিত্য নতুন কথা বলত।
প্রাকৃত ভাষা বিবর্তিত হয়ে শেষ যে স্তরে উপনীত হয়, তার নাম কি? উঃ অপভ্রংশ।
সুনীত কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে বাংলা ভাষার উদ্ভর কোন অপভ্রংশ থেকে? উঃ পূর্ব ভারতে প্রচলিত মাগবী অপভ্রংশ।
কখন মাগবী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়? উঃ খ্রিষ্টিয় দশম শতকের কাছাকাছি সময়ে।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে বাংলা ভাষার উৎস কোন অপভ্রংশ থেকে? উঃ গৌড় অপভ্রংশ থেকে।
কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি? উঃ মাগধী প্রাকৃত।
প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার স্তর কয়টি? উঃ তিনটি।
বৈদিক ভাষা হতে বাংলা ভাষায় বিবর্তনের প্রধান ধারা কয়টি? উঃ তিনটি।
বাংলা ভাষা কোন গোষ্ঠীর বংশধর? উঃ ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠীর।
কোন যুগে বাংলা লিপির গঠনকার্য স্থায়ীরূপ লাভ করে? উঃ প্রাচীন যুগে।
বাংলার প্রথম মুদ্রন প্রতিষ্ঠানের নাম কি? উঃ শ্রীরামপুর মিশন।
কত সালে ‘শ্রীরামপুর মিশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়? উঃ ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে।
বাংলা ছাড়া ব্রাহ্মী লিপি থেকে আর কোন লিপির উদ্ভব ঘটেছে? উঃ সিংহলী, শ্যামী, নবদ্বীপি, তিব্বতী ইত্যাদি।
বাংলা অক্ষর বা বর্ণমালা কোন সময়ে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার লাভ করে? উঃ খ্রিষ্টিয় দশম ও একাদশ শতাব্দীর মধ্যে।
ব্রাহ্মী লিপির বিবর্তনের ধারায় কোন বর্ণমালা থেকে বাংলা বর্ণমালার উৎপত্তি? উঃ পূর্ব ভারতীয় কুটিল বর্ণমালা থেকে।
ব্রাহ্মী লিপির পূর্ববর্তী লিপি কোনটি? উঃ খরোষ্ঠী লিপি।
ভারতীয় লিপিমালার প্রাচীনতম রূপ কয়টি? উঃ দুইটি।
খ্রিষ্টপূর্ব ৩য় শতকে কোন শাসকের শাসনমালা ব্রাহ্মী লিপিতে উৎকীর্ণ পাওয়া যায়? উঃ সম্রাট অশোক।
বাংলা লিপি ও বর্ণমালার উদ্ভব হয়েছে কোন লিপি থেকে? উঃ কুটিল লিপি।
কোন যুগে বাংলা লিপি ও অক্ষরের গঠনকার্য শুরু হয়? উঃ সেন যুগে।
কোন কোন লিপির উপর বাংলা লিপির প্রভাব বিদ্যমান? উঃ উড়িষ্যা মৈথিলি ও আসামী লিপি।
বাংলা গদ্যের বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে? উঃ সাময়ীক পত্র।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন কি? উঃ চর্যাপদ।
চর্যাপদ রচনা করেন কারা? উঃ বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ।
চর্যাপদ কোন যুগের নিদর্শন? উঃ আদি/ প্রাচীন যুগ।
চর্যাপদের পুঁথি কে এবং কখন আবিস্কার করেন? উঃ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে।
চর্যাপদের রচনা কাল কত? উঃ সপ্তম -দ্বাদশ শতাব্দী।
চর্যাপদ কোথায় পাওয়া যায়? উঃ নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগারে।
চর্যাপদ কোন ভাষায় রচিত হয়? উঃ বঙ্গকামরুপী ভাষায়।
টীকাকার মুনিদত্তের মতানুসারে চর্যাপদের নাম কি? উঃ আশ্চর্য চর্যাচয়।
নেপালে প্রাপ্ত পুঁথিতে পদগুলির কি নাম দেয়া হয়েছে? উঃ চর্যাচর্য বিনিশ্চয়।
বাংলা ভাষার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায় কোন ভাষার? উঃ মুন্ডা ভাষার।
কোন লিপি থেকে বাংলা লিপির উদ্ভব ঘটেছে? উঃ ব্রহ্মী লিপি।
ভারতীয় লিপিমালার প্রাচীনতম রূপ কয়টি ও কি কি? উঃ দুইটি ক. খরোষ্ঠী, খ. বাহ্মী।
ভারতের মৌলিক লিপি কোন লিপিকে বলা বলে? উঃ ব্রাহ্মী লিপি।
চর্যাপদের ভাষাকে কে বাংলা ভাষা দাবি করেছেন? উঃ অধ্যাপক সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যয়।
আধুনিকের পন্ডিতগণের মতে, নেপালে প্রাপ্ত চর্যাপদের পুঁথির নাম কি ? উঃ চর্যাগীতি কোষ।
চর্যার প্রাপ্ত কোন সংখ্যক পদটি টীকাকার কর্তৃক ব্যাখ্যা হয়নি ? উঃ ১১ সংখ্যক পদ।
চর্যার প্রাপ্ত পুঁথিতে কোন কোন সংখ্যক পদে সম্পূর্ন পাওয়া যায় নি? উঃ ২৪, ২৫, ৪৮ সংখ্যক পদ।
চর্যার প্রাপ্ত কোন পদটির শেষাংশে পাওয়া যায় নি? উঃ ২৩ সংখ্যক পদ।
চর্যাগীতিকা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক কবে প্রকাশিত হয়েছিল? উঃ ১৯১৬ সালে।
চর্যা সংগ্রহটিতে সর্বসমেত কয়টি চর্যাগীতি ছিল? উঃ ৫১ টি।
চর্যাপদের তিব্বতী অনুবাদ কে আবিস্কার করেন? উঃ ডঃ প্রবোধচন্দ্র বাগচী।
চর্যাপদের ভাষায় কোন অঞ্চলের নমুনা পরিলক্ষিত হয়? উঃ পশ্চিম বাংলার প্রাচীনতম কথ্য ভাষার।
ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যয় কবে চর্যাপদে ভাষা বাংলা বলে প্রমান করেন? উঃ ১৯২৬ সালে।
চর্যাপদের প্রতিপাদ্য বিষয় কি? উঃ চর্যাপদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় বৌদ্ধ সহজিয়া সিদ্ধাদের গুহ্য সাধনতত্ত্ব
এবং তৎকালীন সমাজ ও জীবনের পরিচয়।
চর্যাপদ কোন ছন্দে রচিত? উঃ মাত্রাবৃত্তে ছন্দে।
চর্যাপদের পুঁথি নেপালে যাবার কারন কি? উঃ তুর্কী আক্রমনকারীদের ভয়ে পন্ডিতগণ তাদের পুুথি নিয়ে নেপালে পালিয়ে গিয়ে শরনার্থী হয়েছিলেন।
কীর্তিলতা, পুরুষ পরীক্ষা, বিভাগসার প্রভৃতি সাহিত্যকর্মের রচয়িতা কে? উঃ মিথিলার কবি বিদ্যাপতি।
কবীন্দ্রবচন সমুচ্চয় ও সদুক্তি কর্ণামৃত কাব্য কোন যুগে রচিত? উঃ সেনযুগে।
সর্বসমেত কয়টি চর্যাগীতি পাওয়া গিয়েছে? উঃ সাড়ে ছেচল্লিশটি।
সবচেয়ে বেশী পদ কে রচনা করেছেন? উঃ কাহ্নপা, ১৩ টি।
চর্যাপদের রচয়িতা কে বা কারা? উঃ কাহ্নপা, লুইপা, কুক্কুরীপা, ভুসুকু, সরহপাদ সহ মোট ২৪ জন।
চর্যাপদ কোন সময়ে রচিত হয়? উঃ সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে।
চর্যাপদের পদগুলো কোন কোন ভাষায় রচিত বলে দাবি করা হয়? উঃ বাংলা, হিন্দী, মৈথিলী, অসমীয় ও উড়িয়া ভাষায়।
রাজা লক্ষন সেনের রাজসভার পঞ্চরত্ন কে কে ছিলেন? উঃ উমাপতিধর, শরণ, ধোয়ী, গোবর্ধন আচার্য ও জয়দেব।
বাংলা ছাড়া কোন কোন বাব্যগ্রন্থে বাঙালী জীবনের চিত্র রয়েছে? উঃ গাথা সপ্তপদী ও প্রাকৃত পৈঙ্গলের।
চন্ডীদাস সমস্যা কি? উঃ বাংলা সাহিত্য একাধিক পদকর্তা নিজেকে চন্ডীদাস পরিচয় দিয়ে সৃষ্ট সমস্যা।
বাংলা সাহিত্যে স্বীকৃত চন্ডীদাস কয়জন? উঃ তিনজন। বড়ু চন্ডিদাস, দীন চন্ডিদাস এবং দ্বীজ চন্ডিদাস।
শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন কাব্য কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়? উঃ পশ্চিম বঙ্গের বাকুড়া জেলার কাকিলা গ্রামের এক গৃহস্থ বাড়ীর গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করেন।
বৈষ্ণব পদাবলীর আদি রচয়িতা কে? উঃ বড়ু চন্ডিদাস।
আদি যুগে লোকজীবনের কথা বিধৃত সর্বপ্রথম সাহিত্যক নিদর্শন কোনটি? উঃ ডাক খনার বচন।
মধ্যযুুগের বাংলা সাহিত্যর প্রধান দুটি ধারা কি ? উঃ ১। কাহিনীমূলক ও ২। গীতিমূলক।
শ্রী চৈতন্যর নামানুসারে মধ্যযুগের বিভাজন কিরূপ? উঃ চৈতন্য পূর্ববর্তী যুগ (১২০১-১৫০০ খ্রিঃ), চৈতন্য যুগ (১৫০১-১৬০০) ও চৈতন্য পরবর্তী যুগ (১৬০১-১৮০০)
গীত গোবিন্দ কাব্যগ্রন্থের রচয়িতার নাম কি? উঃ জয়দেব।
ব্রজবুলি ভাষার বিখ্যাত সাহিত্যিকের/শ্রেষ্ঠ কবি নাম কি? উঃ বিদ্যাপতি এবং জয়দেব।
চৈতন্য পরবর্তী যুগ বা মধ্যযুগের শেষ কবি কে? উঃ ভারতচন্দ্র রায় গুনাকর।
আধুনিক যুগের উদগাতা কে? উঃ মাইকেল মধুসুদন দত্ত।
কোন যুগকে অবক্ষয়ের যুগ বলা হয়? উঃ ১৭৬০-১৮৬০ সাল পর্যন্ত।
বাংলা সাহিত্যর আধুনিক যুগের সময়কাল কয়পর্বে বিভক্ত ও কি কি? উঃ চারটি পর্বে বিভক্ত। যেমন- ১. প্রস্তুতি পর্ব (১৮০১-১৮০৫)খ্রিঃ,
২. বিকাশ পর্ব (১৮৫১-১৯০০) খ্রিঃ, ৩.রবীন্দ্র পর্ব (১৯০১-১৯৪০) খ্রিঃ ও
৪.অতি-আধুনিক যুগ (১৯০১ বর্তমান কালসীমা)।
আধুনিক যুগ কোন সময় পর্যন্তু বিস্তৃত? উঃ ১৮০১ সাল থেকে বর্তমান।
যুগ সন্ধিক্ষনের কবি কে ? উঃ ঈশ্বরচন্দ্র দত্ত।
ব্রজবুলী ভাষার উদ্ভব কখন হয়? উঃ কবি বিদ্যাপতি যখন মৈথিল ভাষায় রাধাকৃষ্ণ লীলার গীতসমূহ রচনা করেন।
ব্রজবুলি ভাষা কোন জাতীয় ভাষা? উঃ মৈথলী এবং বাংলা ভাষার মিশ্রনে যে ভাষার সৃষ্টি হয়।
ব্রজবুলি কোন স্থানের উপভাষা ? উঃ মিথিলার উপভাষা।
বাংলা ভাষায় রামায়ন কে অনুবাদ করেন? উঃ কৃত্তিবাস।
রামায়নের আদি রচয়িতা কে? উঃ কবি বাল্মীকি।
বাংলা ভাষায় মহাভারত কে অনুবাদ করেন? উঃ কাশীরাম দাস।
মহাভারতের আদি রচয়িতা কে? উঃ বেদব্যাস।
গীতি কাব্যের রচয়িতা কে? উঃ গোবিন্দ্রচন্দ্র দাস।
পুঁথি সাহিত্যের প্রথম সার্থক কবি কে? উঃ ফকির গরিবুল্লাহ।
মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি কে? উঃ মুকুন্দরাম চক্রবর্তী।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যর প্রাচীনতম শাখা কোনটি? উঃ কাব্য।
বাংলা গদ্য সাহিত্য কখন শুরু হয়? উঃ আধুনিক যুগে।
আলাওল কোন যুগের কবি? উঃ মধ্য যুগের।
মধ্যযুগের অবসান ঘটে কখন? উঃ ঈশ্বর গুপ্তের মৃত্যুর সঙ্গে।
উনিশ শতকের সবচেয়ে খ্যাতনামা বাউল শিল্পী কে? উঃ লালন শাহ।
No comments