জানা-অজানা নিউজ (গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ এখন হুমকির সম্মুখীন )
গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশঃ
জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী প্রাণীকুলের অস্তিত্ব এখন হুমকির সন্মুখিন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দ্বীপরাষ্ট্র এবং উপকূলীয় অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার দেশগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। যদিও গ্রীন হাউজ গ্যাসের বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত নগণ্য, তারপরও গ্রীন হাউজের প্রভাবে বাংলাদেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হতে পারে যে, আগামি কয়েক দশকে বাংলাদেশের নদ-নদী গুলোতে শুষ্ক মৌসুমে নদীপ্রবাহ মারাত্মক ভাবে হ্রাস পাবে। এছাড়া সমুদ্র উপকূলীয়বর্তী এবং নদী তীরবর্তী এলাকা গুলোতে বন্যা প্রবণতা এবং ঝড় জলোচ্ছ্বাস ব্যাপকতা খুবই বৃদ্ধি পাবে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত, আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিটির সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৫০ সাল নাগাদ নদ-নদী গুলোতে পানি প্রবাহ আশংকাজনক ভাবে হ্রাস পাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ গুলো ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গ্রীন হাউজ প্রভাবের ফলে বাংলাদেশের ওপর যে যে প্রতিক্রিয়া গুলো সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছেঃ
গ্রীন হাউজ প্রভাবের কারণে ভূমণ্ডলীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে পানির তাপীয় প্রসারণ, মেরু এবং হিমবাহ অঞ্চলের বরফ গলনে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এই উচ্চতা বৃদ্ধি বঙ্গোপসাগরের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি ২.২৫ মিটার উঁচু হয় তাহলে, উপকূল সীমা বর্ধিত হয়ে যশোর, ফরিদপুর, চাঁদপুর পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে যাবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলে পটুয়াখালী, বাগেরহাট, খুলনা, বরিশাল বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হবে।
সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে প্রচুর আবাদ যোগ্য জমি সাগরে জলমগ্ন হবে। ফসল উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে এবং খাদ্যাভাব দেখা দিবে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বহু উদ্ভিদ প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটবে। উপকূলীয় এলাকাগুলোর অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। সুন্দরবন সহ নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, পটুয়াখালী ও বৃহত্তম বরিশালের বিস্তীর্ণ ম্যানগ্রোভ বনভূমি ধ্বংসের মুখে পতিত হবে।
নদ-নদী গুলোতে লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বনাঞ্চল ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে মিঠাপানির মৎস্যসহ অন্যান্য প্রাণীর বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। কৃষিকাজের জন্য পানির স্বল্পতা দেখা দিবে। ফলে, এদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পাহাড়ি এলাকা থেকে নদীবাহিত বিপুল পরিমাণ পলি নদীমুখে এবং সমুদ্র উপকূলে জমা হয়ে নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করবে। এর ফলে বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে।
লেখাটি আপনার কতটা উপকারে আসলো তা নিচে কমেন্ট করে জানান। এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। নিজে জানুন ও অন্যকেউ জানতে সাহায্য করুন।